Sunday, June 15, 2014

ঘুমাতে যাওয়ার আগে যে ৫ টি বিষয় আপনার সুনিদ্রা নিশ্চিত করবে :

বিশ্বনেতাদের অনেক খারাপ সিদ্ধান্তের জন্য তাদের সুনিদ্রার অভাবকেই দায়ী করেছেন সাংবাদিক Arianna Huffington। উন্নততর বিশ্ব তৈরি করতে তিনি আমাদের সবার প্রতি পরিমিত ঘুম ঘুমানোর আহ্বান জানান। সমস্ত পৃথিবী যখন হাতের মুঠোয়, আঙুলের ইশারায় যুক্ত থাকতে পারছি পৃথিবীর আর প্রান্তের মানুষের সাথেও, তখন ঘুমানোর ফুসরত পাওয়াটাই কঠিন বৈকি! ফলে ঘুমের জন্য বরাদ্দকৃত সময়টুকুতে আমরা ভালো ঘুম ঘুমিয়ে উঠতে পারি না। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এ্যালকোহলে নেশাতুর হলে যে সব উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়, সুনিদ্রার অভাবজনিত কারণে একই উপসর্গ দেখা যায়- প্রতিক্রিয়ায় স্থবিরতা, বিবেচনাবোধ লোপ এবং বুদ্ধিমত্তা কমে যাওয়া। সহজভাবে বলা যায়, আমরা যখন পরিমিত ঘুম ঘুমাতে পারি না, তখন আমরা একরকম মাতাল অবস্থায় থাকি।

আজকে রাতে ঘুমের জন্য পাঁচটি বিষয় মেনে চলুন। দেখবেন চমৎকার ঘুম ঘুমিয়ে সকালে জেগে উঠছেন ঝরঝরে শরীর আর প্রফুল্ল মন নিয়ে।

১। মাথা থেকে পায়ের আঙুল পর্যন্ত সমস্ত শরীর প্রশান্ত রাখুন:

শরীর ও মন যদি প্রশান্ত থাকে তবে রাতে চমৎকার একটি ঘুম আপনার প্রাপ্য। টেনশনমুক্ত অনুভূতি থেকেই আমাদের শরীর ঘুমের জন্য প্রস্তুতি নেয়। গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, শরীর ও মন শান্ত থাকলে ঘুমের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ঘুমের আগে তাই শরীর ও মনকে শান্ত করুন। ঝেড়ে ফেলুন সকল মানসিক চাপ। রেখে দিন ওগুলো পরদিন সকালের জন্য; আগে আজকের রাতের ঘুম হোক সুন্দর।

২। কল্পনায় আপনার মনকে নিয়ে যান অন্য কোথাও:

একটি ব্যস্ত দিন শেষে এর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রভাব মনের মাঝে থেকে যেতে পারে দীর্ঘসময় ধরে। মনকে ভাবনাশূন্য করা কঠিন। কিন্তু আপনি মনকে টেনে নিতে পারেন ভালোলাগা কোন কল্পনার রাজ্যে। কল্পনার রাজ্যে ঘুরতে ঘুরতে কখন যে আপনি ঘুমিয়ে পড়বেন, টেরই পাবেন না।
৩। ঘরের আলো কমিয়ে দিন আর এড়িয়ে চলুন ইলেক্ট্রনিক স্ক্রিন:

Harvard Medical School’s Sleep Lab এর গবেষকরা সম্প্রতি ঘুমের মানের উপর আলোর বিরূপ প্রভাব দেখিয়েছেন। যতদূর সম্ভব ঘরে আলো কম রাখুন। আর টিভি, ল্যাপটপ, ডেস্কটপের
মনিটর, ট্যাবলেট বা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের আলো এড়িয়ে চলুন। এগুলোর আলো আপনার ঘুমের মানসিক প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর।

৪। শোবার ঘর ঠাণ্ডা রাখুন:

রাতে তাপমাত্রা যখন ধীরে ধীরে কমে আসতে থাকে তখন আমাদের শরীর ঘুমের সংকেত পায়। তাই আপনি শোবার আগে হালকা গরম পানিতে গোসল করে সেরে নিতে পারেন। ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থেকে একটু কম হলে ভালো। তাপমাত্রার এই পরিবর্তন আপনাকে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করবে আর অবশ্যই ভালো ঘুম হবে।

৫। লিখে ফেলুন তিনটি ভালো জিনিস:

The Positive Psychology Movement এর প্রতিষ্ঠাতা Dr. Martin Seligman আবিষ্কৃত “Three Good Things” ঘুমের জন্য কার্যকরী ভালো একটা মানসিক ব্যায়াম। প্রতিদিন কমপক্ষে তিনটি ভালো কাজের কথা লিখে রাখলে সেগুলো মনের উপর ভালো প্রভাব ফেলবে। যা মনে আনবে প্রশান্তি। আর মনে প্রশান্তি মানেই ভালো ঘুমের নিশ্চয়তা।

হাতের নখ দেখে বুঝে নিন জটিল কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ :

প্রাচীন চীনের চিকিৎসকগণ হাতের আঙুলের নখ দেখে স্বাস্থ্য সমস্যা চিহ্নিত করতেন। নখ হৃদরোগ থেকে থাইরয়েড সমস্যা ও অপুষ্টিজনিত অনেক সমস্যাই চিহ্নিত করতে পারে। জেনে নিন জটিল স্বাস্থ্য সমস্যার ৫টি লক্ষণ যা নখ দেখে বুঝতে পারবেন আপনিও—
১। আঙুলের মাংস থেকে নখ পৃথক হয়ে আসা:

নখ আঙুলের মাংসের সাথে যুক্ত থাকে। যদি এমন কখনো হয় যে নখ আঙুল থেকে উঠে আসছে অর্থাৎ নখ মাংস থেকে ছেড়ে আসছে তবে তা অবশ্যই স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। জীবাণুর সংক্রমণ, থাইরয়েড রোগ, ড্রাগ রিয়েকশন, Psoriasis, নখ অস্বাভাবিক শক্ত হওয়া প্রভৃতি সমস্যায় এরকমটি হতে পারে।
২। নখ হলুদ হওয়া:

নখ তার স্বাভাবিক রঙ হারিয়ে হলুদ হয়ে গেলে, নখের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বা হ্রাস পেলে ও উজ্জ্বলতা কমে গেলে ধারণা করা হয় জণ্ডিস, ব্রঙ্কাইটিস, শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা বা হাতফোলা রোগ (lymphedema) শরীরে বাসা বেঁধেছে।
৩। চামচ আকৃতির নখ:

নখ নরম ও পাতলা হয়ে ক্ষয়ে গিয়ে চামচের অবতল পিঠের মতো আকার ধারণ করার সম্ভাব্য কারণগুলো হচ্ছে— শরীরে আয়রণের অভাব ও রক্তশূন্যতা।
৪। নখের অস্বাভাবিক বক্রতা:

নেইলস্ট্রিপের কাছাকাছি থেকে নখ যদি একটু উপরের দিকে বেঁকে বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ নখ ও নখের মাংসের স্বাভাবিক কৌণিক অবস্থান যদি না থাকে তবে এর কারণ হতে পারে— হৃদরোগ, রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা, কার্ডিওভাসকুলার রোগ বা লিভারের রোগের মতো জটিল রোগ।
৫। অস্বচ্ছ নখ:

নখ যদি অস্বচ্ছ হয় এবং নখে গাঢ় দাগ পড়ে তবে বুঝতে হবে এটির কারণ হয়তো অপুষ্টি, হৃদক্রিয়ার সমস্যা, ডায়াবেটিস বা যকৃতের রোগ।

নখের এইসব সমস্যার কোনটি দেখা দিলে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ থাকুন।

রাতের বেলার অদ্ভুত রোগ বোবায় ধরা :


মধ্যরাতে হঠাত্‍ ঘুম ভেঙে গেল। অনুভব করলেন, আপনার বুকের ওপর ভারী কিছু বসে আছে। এত ভারী কিছু যে ঠিকঠাক নিঃশ্বাসই নিতে পারছেন না আপনি। কেমন লাগবে তখন? নিশ্চয়ই খুব ভয় পাবেন! এটা একটা ভীতিকর পরিস্থিতিই বটে যখন টের পাবেন আপনি চাইলেও শরীরের কোনো অংশ নাড়াতে পারছেন না, এমনকি চিত্‍কারও করতে পারছেন না। নিজেকে এমন অসহায়ভাবে আবিষ্কার করলে ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক। এই সমস্যাটাকে বলে স্লিপ প্যারালাইসিস। সাদা বাংলায় আমরা যাকে বলি বোবায় ধরা।
কাকে বলে বোবা ধরা? :

বিশেষজ্ঞদের মতে, বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিস স্রেফ একটা ইন্দ্রিয়ঘটিত ব্যাপার। যখন শরীর গভীর ঘুমের এক পর্যায় থেকে আরেক পর্যায়ে যায়, তখনই এটা ঘটে থাকে। বোবা ধরলে একেজনের একেক রকম অভিজ্ঞতা হয়। কেউ ঘরের ভেতর ভৌতিক কিছুর উপস্থিতি টের পান, কেউ দুর্গন্ধ পান, কেউ বা ভয়ানক কোনো প্রাণি দেখতে পান। মোট কথা তখন একটা হ্যালুসিনেশনের মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়। গভীর ঘুমের এক পর্যায় থেকে আরেক পর্যায়ে যাবার সময় মস্তিষ্ক সতর্ক হয়ে ঘুম ভেঙে গেলেও শরীর আসলে তখন ঘুমেই থাকে। ফলে অভিজ্ঞতাটা অন্যরকম থাকে। বিশেষ করে ইন্দ্রিয় তখন আচ্ছন্ন থাকায় মানুষ অদ্ভুত কিছু দেখে এবং শ্বাসকষ্ট অনুভব করে। সাধারণত যাদের ঘুমের সমস্যা থাকে তারাই বেশি স্লিপিং প্যারালাইসিসে ভোগে। অনেকেই এটা বিশ্বাস করে অতিলৌকিক কোনো কিছু এ ব্যাপারটি ঘটায়। আসলে এটা স্রেফ একটি শারীরবৃত্তীয় ব্যাপার।
কেন এমন হয়? :

বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিসের পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। এর অন্যতম কারণ হলো চাপের মধ্যে থাকা এবং যথেষ্ট পরিমাণে বিশ্রামের অভাব। অনিয়মিত ঘুমও এর আরেকটি কারণ। ঘুম বিশেষজ্ঞরা এটাও বলেন যে, যখন ঘুমের এক ধাপ থেকে আরেক ধাপে যাবার সময় শরীর সাবলীলভাবে নড়াচড়া করতে পারে না, তখনই মানুষ বোবা ধরা বা স্লিপিং প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়। এছাড়া আরও কিছু ব্যাপার বোবা ধরার কারণ হতে পারে। যেমন ঘুমের নির্দিষ্টতা না থাকা, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, ঘুমের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সমস্যা, হাত-পায়ের মাংসপেশিতে খিঁচ ধরা, অনিদ্রা, বিষণ্নতা ইত্যাদি।
পরিত্রাণের উপায় :

বোবায় ধরা বা স্লিপিং প্যারালাইসিস থেকে বাঁচার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সহজ উপায় হলো ঘুমের নির্দিষ্ট সময় মেনে চলা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই সমস্যাটা সাময়িক। কিন্তু যদি এটা ঘন ঘন হতে থাকে এবং কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যার জন্ম দেয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

মর্নিং ওয়াকের সময় যে কথাগুলো একদম নিষিদ্ধ



আপনি কি স্বাস্থ্য রক্ষায় সকালে হাঁটতে যান? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে নিশ্চয়ই আপনার আছে এক বা একাধিক সঙ্গী? তাহলে আজ জেনে নিন, হাঁটার সময়ে কোন কথাগুলো বললে আপনার সঙ্গীরা হতে পারেন ভীষণ বিরক্ত। শুধু তাই নয়, আপনাকে যদি কেউ এমন কথা বলে তাহলে আপনার ব্যায়ামেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে আর নষ্ট হতে পারে এনার্জি। আসুন জানি মর্নিং ওয়াকে নিষিদ্ধ সেই কথাগুলো সম্পর্কে।
১. আপনি কি জগিং করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন :

কেউ যদি জগিং করতে থাকেন তাহলে তাকে কখনই বলবেন না যে আপনি কি জগিং করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন? এতে করে সেই ব্যক্তিটির সব এনার্জি নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি মনে মনে ভাবতে শুরু করবেন যে আমি হয়ত সত্যিই ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। এ কারণে তার প্রয়োজন অনুযায়ী তিনি আর জগিং করতে চাইবেন না। ফলে তার ক্ষতি হবে।
২. প্রতিদিন হাঁটা কোনো ব্যায়ামই নয় :

এই ধরনের কথা কখনই একজন হাঁটতে ইচ্ছুক লোকের সামনে একেবারেই বলবেন না। এতে করে তার হাঁটার ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যাবে। অবশ্যই প্রতিদিন হাঁটা এক ধরনের ব্যায়াম। এর ফলে অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে।
৩. আপনি কি কোনো যানবাহনে চড়তে চাইছেন :

আপনি যদি দেখে থাকেন যে একজন হাঁটছেন, তার হয়তবা অনেক কষ্ট হচ্ছে তবু তিনি হেঁটেই যাচ্ছে। এমন অবস্থায় কখনই বলবেন না যে আপনি কোনো যানবাহনে চড়তে চান কিনা। এতে করে তিনি যদি হালকা অসুস্থও হয়ে পড়েন তারপরও তিনি হয়ত ভাববেন আমি আসলেই হয়ত অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এতে করে তিনি মানসিকভাবে অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। ফলে তার সঠিক শারীরিক কসরতটি হবে না বরং ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
৪. আপনার পোশাকটি ভালো হয় নি :

কেউ যদি হাঁটতে বের হয় আর তার পোশাকটি যদি আপনার পছন্দ না হয় তাহলে আপনি কখনই বলবেন না যে আপনার পোশাকটি মোটেই ভালো হয় নি। তাহলে সেই ব্যক্তিটি বেশ খানিকটাই অসচেতনতায় ভুগবেন। ফলে তার হাঁটাটি যথার্থ হবে না।
৫. তাড়াতাড়ি হাঁটুন, আপনি অনেক ধীরে হাঁটছেন :

যার যার প্রয়োজন এবং শারীরিক সামর্থ্য অনুযায়ী হেঁটে থাকেন। এতে করে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি যদি ডিরেকশন দিয়ে থাকেন যে এভাবে না এভাবে হাঁটুন তাহলে তাদের ব্যায়ামের ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হবে। কেননা একেকজনের শারীরিক দক্ষতা একেক রকম। ফলে আপনি জোরে হাঁটতে বললেও তিনি সেভাবেই হাঁটবেন যতটা তিনি পারছেন। এর বদলে তিনি হয়ত কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগবেন।
৬. ধীরে হাঁটুন, আপনি অনেক জোরে হাঁটছেন :

একইভাবে আপনি কাউকে এই কথাটিও বলবেন না। এতে তিনি বরঞ্চ একটা মানসিক সমস্যায় ভুগবেন। ভালো কিছুই হবে না।
৭. আপনি অনেক বেশি ঘামছেন :

কেউ হাঁটলে ঘাম ঝরবে এটা স্বাভাবিক। এতে হয়ত কারও ঘাম কিছুটা বেশি হয় কারও কিছুটা কম হয়। যাদের দেহে পানির পরিমাণ বেশি তারা বেশি ঘামেন আর যাদের শরীরে পানি কম তারা একটু কম ঘামেন। এক্ষেত্রে অযথা তাদের এই কথা বলে বিব্রত করার কোনো দরকার নেই। কেননা এতে হতে পারে তাদের মধ্যে এই নিয়ে কোনো ধরনের মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে। তাই এই ধরনের কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।

যে এনার্জি ড্রিংক আপনার পেটের মেদ ৭৭% বিনাশ করে দিবে


‘ব্ল্যাক লায়ন’, ‘মাস্টার হর্স’ কিংবা ‘ড্রাগনস’ এনার্জি’ এমন চটকদার নামের এনার্জি ড্রিংকগুলোর কথা ভুলে যান। এগুলোতে যে শুধু কৃত্তিম উদ্দীপক উপাদানই ব্যবহার করা হয়, তা নয়; থাকতে পারে কৃত্তিম রঙ ও চিনি। এইসব এনার্জি ড্রিংক পান করে আপনি কখনোই রকস্টার কিংবা কুংফু মাস্টার হতে পারবেন না। যা হবে, তা হলো আপনি আপনার অন্ত্র আর দাঁতের বারোটা বাজাবেন।

এমন কিছু পেলে কেমন হতো যা একই সঙ্গে আপনার শক্তিও বৃদ্ধি করবে এবং মেদও কমাবে। ভাবছেন এতো অসম্ভব তাই না? ড. মিশেল Super Fat-Busting Green Tea Lemonade নামে সেরকমই অসম্ভব একটি ড্রিঙ্কের রেসিপি দিয়েছেন। সম্পূর্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়েই তৈরী করা যায় এই এনার্জি ড্রিঙ্ক।

আপনার নিশ্চয়ই জানা আছে- গ্রিন টি শুধু আপনার দেহে প্রয়োজনীয় শক্তিই সঞ্চার করে না, গবেষণায় দেখা গেছে এটি কলোরেক্টাল, ফুসফুস এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং আপনার ত্বককে কুঁচকে যাওয়া বা বিবর্ণ হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। গ্রিন টিতে রয়েছে Epigallocatechin gallate অথবা সংক্ষেপে EGCG নামে পরিচিত উদ্ভিদের প্রচুর পুষ্টিগুণ।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে EGCG পেটে জমে যাওয়া চর্বি দূর করতে খুব কার্যকর। টাফ্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যায় গ্রিন টিতে ফ্ল্যাভোনয়েড ও ক্যাটচীনের মতো পলিফেনল রয়েছে, যা পেটের চর্বি নাশ করে ৭৭ শতাংশ ওজন কমাতে সক্ষম। Journal of Nutrition এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে যে- যারা গ্রিন টি পান করেন না তাদের তুলনায় যারা দিনে ৪-৬ কাপ গ্রিন টি পান করেন তাদের পেটের চর্বি কমপক্ষে সাত শতাংশ বেশি ঝরেছে।

এবার তাহলে জেনে নেয়া যাক ড. মিশেলের Super Fat-Busting Green Tea Lemonade তৈরির রেসিপিটি।

যা যা লাগবে:
৬ টি গ্রিন টিব্যাগ
২৫০ মিলি বিশুদ্ধ পানি
৪ টি লেবুর রস
১০-২০ ফোঁটা তরল স্টেভিয়া ( স্টেভিয়া এক প্রকার উদ্ভিদ, যার পাতা চিনির মতো মিষ্টি)/কৃত্রিম চিনি
বরফের টুকরা
সতেজ পুদিনা পাতা

প্রস্তুত করবেন যেভাবে:
৬ টি গ্রিন টিব্যাগ কাপে বা মগে রেখে তার ওপর ফোটানো পানি ঢালুন। এভাবে দুই মিনিট রেখে টি-ব্যাগগুলো তুলে ফেলুন। কয়েক টুকরা বরফ দিয়ে পানি ঠান্ডা করে লেবুর রস ও স্টেভিয়া যোগ করুন। ভালো ভেবে নেড়ে পরিবেশনের আগে পুদিনা পাতা দিতে ভুলবেন না।

হয়ে গেলো প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি এনার্জি ড্রিংক। এবার আপনি ঘরে Super Fat-Busting Green Tea Lemonade তৈরি করে পান করুন আর দূরে ঠেলুন পেটের ভাঁজে জমে থাকা চর্বি শরীর থেকে।

“৬টি স্বাস্থ্যকর ইনডোর প্ল্যান্ট”

আমরা ঘরে বা অফিসে অনেক সময় এ ইনডোর প্ল্যান্ট (গাছ) রেখে থাকি। কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট অফিসে বা ঘরে রাখলে তা ঘরের বাতাস হতে ক্ষতিকর পদার্থ শুষে নিয়ে স্বাস্থ্যকর আবহাওয়া তৈরী করে, পাশাপাশি মস্তিষ্কের উপর কাজ করে মনকেও প্রফুল্ল রাখতে সহায়তা করে। সেসব ইনডোর প্ল্যান্ট নিয়েই আমাদের আজকের পোস্ট-

১) বাটারফ্লাই পামঃ বাংলাদেশের খুবই জনপ্রিয় একটি ইনডোর প্ল্যান্ট (ছবি দেখুন)... এটি বায়ু হতে দূষিত পদার্থ শোষন করে।

২) পুদিনাঃ International Journal of Neuroscience এর গবেষনা অনুযায়ী, ঘরের এক কোনায় টবে রাখা পুদিনা গাছ, মস্তিষ্ক কে উজ্জীবিত করে এবং স্মরণ শক্তি বাড়ায়। পাশাপাশি এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রন করে ওজন নিয়ন্ত্রন করে।

৩) ইংলিশ আইভি (ছবি দেখুন)ঃ অফিসের কম্পিউটার ও অন্যান্য মেশিন হতে কিছু উদ্বায়ী পদার্থ বাতাসে মিশে মাথাব্যথা তৈরী করে। University of Georgia এর গবেষনা অনুযায়ী, ইংলিশ আইভি এইসব পদার্থ বাতাস হতে শোষন করে নেয়। ফলে অফিসের ভেতরকার বাতাস স্বাস্থ্যকর থাকে।

৪) লেমন বাম (ছবি দেখুন)ঃ Ohio State University এর গবেষনা অনুযায়ী, এই গাছের সুগন্ধ মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত করে একটি হরমোনের নিঃসরণ ঘটায়। এই হরমোন মানুষের মুড বদলে তাকে হাসিখুশী করে তোলে।

৫) মানি প্ল্যান্টঃ অফিসের ফটোকপি ও প্রিন্টার হতে সামান্য ওযোন গ্যাস নির্গত হয়। এমনকি এই সামান্য গ্যাসও বুকে ব্যথা ও গলা খুসখুস তৈরী করতে পারে। Penn State এর গবেষকদের মতে, অফিস রুমে মানি প্ল্যান্ট রাখলে তা সক্ষম ভাবে এই ক্ষতিকারক ওযোন গ্যাস শুষে নেয়।

৬) গন্ধরাজঃ Rutgers এর গবেষক দের মতে, গন্ধরাজ হতে আসা সুগন্ধ মানুষের মনের উপর সক্ষমভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে

চিকেন পক্সঃ

চিকেন পক্স একটি ছোয়াচে রোগ যা varicella virus এর কারণে হয়ে থাকে। সাধারণত টীকা দেয়া হয়েনি এরকম বাচ্চাদের এই রোগ হয়। সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার ১০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষন প্রকাশ পায়। এই রোগে সারা শরীরে ছোট ছোট পানি যুক্ত লালচে গোটাউঠে। সাথে সাথে জ্বর, মাথা ব্যথা, দূর্বলতা ও শরীরে ব্যথা দেখা দেয়। তবে এটির সঙ্গে থাকা চুলকানিই মূলত অস্বস্তির কারণ হয়ে দাড়ায়। চুলকাতে গিয়ে গোটা ফেটে গিয়ে এর অভ্যন্তরীন লিকুইড চারিদিকে ছড়িয়ে পরে সংক্রমন বাড়ায়। সাবধানে থাকলে এই রোগ কোন চিকিৎসা ছাড়াই আরোগ্য হয়।

>যা যা কম খাবেনঃ
• স্যাচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত খাবার যেমন চর্বি যুক্ত মাংস ও ফুল-ফ্যাট দুধ। এতে থাকা ফ্যাট প্রদাহ বারিয়ে সেরে ওঠাকে ধীর করে ফেলে।
• লেবু খাবেন না যদি মুখের ভিতর গোটা থাকে। লবনাক্ত ও ঝাল খাবার ও বাদ দিবেন।
• আরজিনিন নামক একটি এমাইনো এসিড, পক্স ভাইরাস এর জীবন প্রণালি কে সাহায্য করে। আরজিনিন যুক্ত খাবার যেমন চকোলেট, বাদাম এবং বীজ জাতীয় যে কোন খাবার খাবেন না।

>যা খাবেনঃ
• সাধারণ ভাত, মাছ, মাংস খেতে পারবেন।
• সূপ খাবেন।
• ফল খেতে পারেন(মুখে ঘা থাকলে নরম ফল খাবেন, টক ফল খাবেন না)।
• দিনে কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করবেন।
• লাইসিন নামক একটি এমাইনো এসিড, আরজিনিন এর প্রভাব কাটাতে সাহায্য করে। লাইসিন পাবেন ডাল এ। তাই নিয়মিত ডাল খাবেন।

>সংক্রমনঃ
নিম্নের বস্তুগুলো দ্বারা আপনিও সংক্রমিত হতে পারেন-
• আক্রান্ত ব্যক্তির পক্স হতে নির্গত রস বা খোসা
• আক্রান্ত ব্যক্তির হাচি-কাশি
• আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে একই বাথটাব/সুইমিংপুল এ গোসল করলে।

>পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাঃ
• হালকা গরম পানিতে গোসল করুন।
• সাবান পানি দিয়ে পক্স ধুতে পারবেন।
• বিদেশে পক্সের এর চুলকানি রোধে খুব জনপ্রিয়ী একটি প্রথা হলো গোসলের পানিতে ওটমিল পাউডার এর ব্যবহার। এক বাথ টাব হালকা গরম পানিতে দুই কাপ ওটমিল পাউডার ভিজিয়ে রেখে তা দিয়ে গোসল করতে পারেন। চুলকানি কমবে। ওটমিল এ silicon, avenanthramides এবং beta-glucan থাকে যা চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। একই পদ্ধতিতে বেকিং সোডাও ব্যবহার করতে পারেন (এক বাথটাবে এক কাপ)।
• গোসল শেষে বেশী চেপে মুছতে যাবেন না। বাতাসে শুকিয়ে নিন।
• চুলকানি কমাতে বেবি ওয়েল, ওলিভ অয়েল বা calamine lotion ব্যবহার করতে পারেন।
• চুলকালে নখ লাগাবেন না। নিম গাছের পাতা দিয়ে আলতো করে চুলকানো দেশীয় মেডিসিনের একটা অংগ। খুব সম্ভবত নিমের এন্টিব্যাকটেরিয়াল গুনের কারণে এমনটা করতে বলা হয়।

>চিকিতসাঃ
ডাক্তারের পরামর্শে পেইন কিলার (মাসল পেইন এর জন্য), এন্টিভাইরাল ড্রাগ (ভাইরাস প্রতিরোধে) এবং এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ (চুলকানি রোধে) খেতে পারেন।

>দাগ মোচনঃ
• নিয়মিত ভিটামিন ই ওয়েল এবং এলোভেরা জেল (ঘৃতকুমারি) লাগাতে পারেন।
• সিলিকন যুক্ত যে কোন ক্রীম দাগে লাগাতে পারেন।
• ওট এর পেস্ট (গরম পানিতে ওট ভিজিয়ে রেখে ডলে নিন) লাগাতে পারেন।
• তাছাড়া কেউ কেউ বলে ডাবের পানি এবং মধু ও দাগ নির্মূলে সহায়তা করে।

>প্রতিরোধঃ
১৯৯৫ সালে চিকেন পক্স এর টীকা আবিষ্কৃত হয়য়। বাচ্চারাদের কে প্রথম ডোজটি ১২-১৮ মাসের মধ্যে দিন। দ্বীতিয় ডোজটি ৪-৬ বছরে দিতে হয়। কারো যদি টীকা দেওয়া না থাকে এবং চিকেন পক্স হয়য়। লক্ষন প্রকাশের ৩ দিনের মধ্যে টীকা দিয়ে দিতে পারেন, রোগের প্রকোপ কমে যাবে। কারো একবার চিকেন পক্স হয়ে গেলে আর টীকার প্রয়োজন নেই। কারণ শরীরে তখন এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে অনেক এন্টিবডি তৈরী হয়ে যায় যা ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য শরীরে জমা থাকে।

>সতর্কতাঃ
• গর্ভাবস্থার প্রথম ছয় মাসে চিকেন পক্স হলে গর্ভপাতের আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি (হাত-পায়ে ত্রুটি,ছোট মাথা, চোখে সমস্যা) ও দেখা দিতে পারে। তাছাড়া এই সময়ে আপনি ওষুধ ও খেতে পারবেন না। সুতরাং ডাক্তার এর নিবির তত্ত্ববধানে থাকুন।
• বাচ্চাদের চিকেন পক্স হলে কখনোই এসপিরিন খাওয়াবেন না। এটি থেকে অন্য একটি রোগ Reye's Syndrome এর উদ্ভব হতে পারে। এই রোগ থেকে শিশুর লিভার, ব্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমনকি মৃত্যু ও হতে পারে