Monday, September 23, 2013

ওজন নিয়ন্ত্রনে এড়িয়ে চলুন ১০টি বদভ্যাস



ওজন নিয়ন্ত্রনে ডায়েটিং বা ব্যায়াম করতে অনেকেরই আলসেমি। কিন্তু আপনি কি জানেন যে যদি আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা যদি খুব বেশী ফ্যাটি না হয় এবং আপনি একদম শুয়ে-বসে থাকা লাইফ স্টাইলে অভ্যস্ত না হন, তাহলে শুধুমাত্র কিছু বদঅভ্যাস এড়িয়ে চলতে পারলে আপনার ওজন না কমলেও অন্তত নিয়ন্ত্রনে থাকবে?

এড়িয়ে চলুন এই সব অভ্যাস-

1. সকালের নাস্তা বাদ দেওয়াঃ সকালের নাস্তা বাদ দিলে আপনি মোটা হবেন দুটো কারণে। প্রথমত, সকালে আপনার শরীর প্রায় ৮-১ ঘন্টা না খাওয়া অবস্থায় থাকে। সকালের নাস্তা বাদ দিলে আপনি ক্ষুধার্ত থাকবেন এবং সেটা ব্যালেন্স করার জন্য শরীর সারাদিন আপনার ক্ষুধার অনুভূতি চাঙ্গা রাখবে। দ্বীতিয়ত, সকালে যখন পেট খালি থাকবে, শরীর সেটাকে ব্যালেন্স করার জন্য আপনার মেটাবলিসম এর হার কমিয়ে ফেলবে। সুতরাং সারাদিন যা খাবেন তা ফ্যাট হিসেবে জমা হবে শরীরে।

2. অনেক ক্ষন না খেয়ে থাকাঃ মোটারা যে ভুলটা করেন তা হলো, প্রয়োজনের চেয়েও কম খাওয়া ও দীর্ঘক্ষন না খেয়ে থাকা। দীর্ঘক্ষন যদি পেট খালি থাকে বা আপনি যদি অতিরিক্ত কম খান, শরীরও তো কম চালাক নয়, সেও মেটাবলিসম এর হার কমিয়ে ফেলে। সুতরাং, মোটা হলে কম না খেয়ে তিন বেলা পর্যাপ্ত খান। তিনবেলা খাবারের মাঝে মাঝে খিদে পেলে ফল বা সবজী বা লো ক্যালরি ফুড খান। আপনাকে বুঝতে হবে যে খালি পেটে দীর্ঘপক্ষন থাকলে শরীরের কাজ কমে যায়। বরং ২ ঘন্টা পর পর অল্প কিছু খেলে শরীরের অনেক শক্তি খাবার হজম করতে ব্যয় হয়ে যায় (ব্যয় না হলে এই শক্তি চর্বিতে পরিণত হয়ে আপনার শরীরে জমা হত) আর পরবর্তী বেলায় আপনার বেশী খেয়ে ফেলার ইচ্ছাটাকেও দমন করে ফেলে।

3. হাটতে হাটতে খাওয়াঃ কিশোর বয়সে বেশিরভাগ ই মানুষ যখন তখন ফ্রীজ খুলে কিছু না কিছু বের করে খায় অথবা আসতে যেতে ডাইনিং টেবিলে রাখা খাবার বা তরকারি থেকে কিছু না কিছু অংশ মুখে তুলে খায়। তাদের বর্ধিষ্ণু শরীরের প্রয়োজনেই তারা এটা করে থাকে। কিন্তু অনেকেরই বড় হওয়ার পরেও এই অভ্যাস রয়ে যায়। এখানে দুইটা বিস্কুট, ওখানে কয়েকটা বাদাম, এক পিস কেক, অর্ধেকটা চকলেট বার, ১ গ্লাস শরবত, ১ প্যাকেট চিপস- শুনতে মনে হয় কিছুনা, কিন্তু একসঙ্গে যোগ করলে এভাবে আপনি কয়েকশ ক্যালরি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন।

4. ভাত খাওয়াকে আবশ্যক মনে করাঃ ভেতো বাঙ্গালীর কাছে ভাত একটি আবশ্যকীয় বস্তু। দেখা যায়, শপিং করতে গিয়ে একটা বার্গার খেয়ে এসেছি, বাসায় এসে খাওয়ার টাইম এ আবার টেবিল এ বসে গেলাম। আমরা গনায় ধরছি না কিন্তু খেয়ে কিন্তু ফেললাম আসলে ৪ বেলা। সুতরাং এই অভ্যাস পরিত্যাগ করুন। প্রথম প্রথম কষ্ট হলে, টেবিল এ বসুন। কিন্তু ভাত না খেয়ে কিছু সব্জী আর ছোট এক পিস মুরগী বা মাছ খেয়ে উঠে যান।

5. অন্যমনস্ক ভাবে খাওয়াঃ অনেকের অভ্যাস আছে টিভি দেখতে দেখতে খাওয়া। খাওয়ার সময় মাথায় রাখতে হবে যে- আমি এখন খাচ্ছি”; অন্যমনস্ক ভঙ্গীতে খেলে, আপনি টেরই পাবেন না যে কখন আপনার হাতের/প্লেটের সবটুকু খেয়ে ফেলেছেন। একই কারণে পার্কে হাটতে হাটতে বা হাতে প্যাকেট নিয়ে শপিং করতে করতে খাবেন না। এমনো দেখা গিয়েছে যে এভাবে খেলে, মানুষ অনেক সময় সে যে হাটতে হাটতে খেয়েছে-এই কথাটুকুও ভুলে যাও। সুতরাং সে সারাদিনে কি কি খেলাম বা কত ক্যালরি খেলাম- সেই হিসাব মিলাতে গিয়ে দুই একটা আইটেম বাদ দিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে সে হতাশ হয়ে পরে যে কিছু না খেয়েই আমি মুটিয়ে যাচ্ছি। সুতরাং, খাওয়াটা কে সবসময় একটা কাজ মনে করুন। সুন্দর করে এক জায়গায় বসে খান। খাওয়ার প্রতি মনযোগ, খাওয়ার স্মৃতিটাকে মস্তিষ্কে গভীর ভাবে গেথে ফেলে আপনার সারাদিনের খাওয়ার অভ্যাস কে নিয়ন্ত্রন করবে।

6. সরাসরি প্যাকেট থেকে খাওয়াঃ সরাসরি চিপস, পপকর্ন বা বিস্কিটের প্যাকেট নিয়ে বসেছেন তো ডুবেছেন। কখনোই হিসেব রাখতে পারবেন না যে কতটুকু খেলেন। দুটো বিস্কিট খেতে চেয়ে দেখা যাবে যে ৫টা বিস্কিটের পুরো প্যাকেট খেয়ে ফেলেছেন। যতটুক খাবেন, সুন্দর করে একটা পিরিচে ঢালুন, এইবার প্যাকেট টা মুড়িয়ে জায়গামত গুছিয়া রাখুন। হয়েছে...এইবার খান।

7. দ্রুত খাওয়াঃ ১৮শ শতকের বিখ্যাত ডাক্তার জনসনের মতে, যে কোন খাবার ৩২ বার চিবিয়ে খাওয়া উচিত। ৩২ বার না চিবালেও দ্রুত খাওয়া শেষ করা যে উচিত না, তা আধুনিক বিজ্ঞানীরাও মানেন। কেননা খাবার খাওয়ার পর, আপনি যে খেয়েছেন- এই সিগনাল মস্তিষ্কে যেতে কিছু সময় লাগে। মস্তিষ্ক সিগনাল পাওয়ার পরে ক্ষুধার অনুভূতি কমিয়ে দেয়। আপনি যদি দ্রুত খাওয়া শেষ করে ফেলেন, সিগনাল তখনো মস্তিষ্কে পৌছাবে না। সুতরাং আপনার ক্ষুধার অনুভূতি তখনো থাকবে এবং আপনি দ্রুত খেলেও বেশী খেয়ে ফেলবেন।

8. পানি কম খাওয়াঃ দিনে ৮ গ্লাস পানি না খেলে শরীরে পানিশুণ্যতা দেখা দেয়। পানিশুণ্য অবস্থায় শরীর ক্লান্ত হয়ে পরে এবং ক্ষুধার অনুভূতি জাগ্রত হয়। ফলে মানুষ তখন খাবারের দিকে হাত বাড়ায় অথচ যার বদলে তার দরকার ছিলো শুধু পানির।

9. কম ঘুমানোঃ গবেষনা দ্বারা এটা এখন রীতিমত প্রমাণিত যে, ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতে হলে আপনাকে রাতে ৬ ঘন্টা ঘুমাতেই হবে। রাতে পর্যাপ্ত না ঘুমালে তা করটিসলহরমোনের নির্গমনের উপর প্রভাব ফেলে। আর মানুষের ক্ষুধার অনুভূতি নিয়ন্ত্রন হয় এই হরমোনটির দ্বারাই। তাছাড়াও গবেষনায় দেখা গিয়েছে যে, রাতে কম ঘুমালে শরীরে ফ্যাট স্টোর ও বেশী হয়।

10. রাতে দেরিতে খাওয়াঃ আমরা বাঙ্গালীরা সাধারণত ১০টা-১১টায় খাই, আর শুয়ে পরি ১২ টায়। একবার খেলে, খাবার হজম হতে দুই ঘন্টা লাগে। তার আগেই শুয়ে পরলে, ঘুমন্ত অবস্থায় শরীরের মেটাবলিসম ধীর হয়ে যায়। ফলে রাতের খাওয়াটা ফ্যাট হিসেবে শরীরে জমা হয়। ঠাট্টা করছি না, এটি গবেষনা দ্বারা প্রমাণ করেছেন নর্থোয়েস্টার ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা যা প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অফ অবেসিটি তে।

হেপাটাইটিস বি

হেপাটাইটিস বি বলতে বুঝায় হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের আক্রমে লিভারে প্রদাহ (inflammation) কে।

ভয়াবহতাঃ
আমাদের দেশের শতকরা ৪-৭% (প্রায় ৬৪ লাখ থেকে ১ কোটি)মানুষ হেপাটাইটিস বি এর বাহক। দেশের প্রায় ৩.৫% গর্ভবতী মহিলারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। মনে রাখতে হবে যে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস এইডস ভাইরাসের থেকে ১০০% বেশী সংক্রামক। বিশ্বে প্রতিদিন যে পরিমান মানুষ এইডস এ মারা যায়, তার দ্বিগুন মারা যায় হেপাটাইটিস বি তে।

সংক্রমনঃ
এই রোগ এর সংক্রমন ঘটে আক্রান্ত ব্যক্তির লালা, রক্ত, বীর্য, যোনীরস ইত্যাদির মাধ্যমে। সুতরাং আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে একই টুথব্রাশ-রেজর ব্যবহার, যৌনসঙ্গম, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে রক্তগ্রহন অথবা তার ব্যবহৃত সিরিঞ্জ বা সুই ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আক্রান্ত হতে পারেন। সুতরাং, আপনার জানা মতে কারো হেপাটাইটিস বি আছে জানলে এসব ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। এছাড়া হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে গর্ভের সন্তান ও আক্রান্ত হয়। মনে রাখবেন সাধারণ ছোয়া, সাধারণ চুম্বন, একই থালা-বাটি (ধোয়া) ব্যবহার, বুকের দুধ, সর্দি-কাশির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায় না।

ধরণঃ
>হেপাটাইটিস বি দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার পর, আপনার শরীরের সাধারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তখন হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করে তা হটাতে চেষ্টা করবে। সাধারণত মাসখানেক এর মধ্যেই (সবেচেয়ে খারাপ ক্ষেত্রে ৬ মাস এর মধ্যে) সে সফল হয়ে যাবে এবং আপনি সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে যাবেন। আপনার শরীরে ভাইরাসটির সাথে যুদ্ধ করার মত সরঞ্জাম তৈরী হয়ে গিয়েছে, তাই আপনি আর কখনো এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবেন না। এই ধরণের রোগকে বলা হয় acute hepatitis।
> অনেক ক্ষেত্রে সে সফল হবেনা এবং এই ভাইরাস আপনার শরীরে পাকাপোক্ত হয়ে বসবে। একে বলা হয় chronic hepatitis। chronic hepatitis এর রোগীদের অনেকের বছরের পর বছর কোন লক্ষনই থাকেনা, তাই তারা জানেই না যে তার এই ভাইরাসে আক্রান্ত। অথচ নিজের অজান্তে সে অন্যদের মাঝে এই ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে থাকে। পাশাপাশি নিজের অজান্তেই তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে এবং কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে। কখনো তা লিভার সিরোসিস বা ক্যান্সারে পরিণত হয়য়। নবজাতকেরা যদি হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়, যেহেতু তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল, ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই তা chronic hepatitis এ রপান্তরিত হয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে chronic hepatitis রুপান্তরিত হওয়ার হার ৬০% এবং পূর্নবয়স্কদের জন্য ১০%।

লক্ষনঃ
>Acute Hepatitis এ, ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ৬ সপ্তাহ থেকে ৬ মাসের মধ্যে নিম্নের লক্ষন গুলো দেখা দেয়-
1. হালকা জ্বর
2. দুর্বলতা
3. হলুদাভ ত্বক ও চোখ
4. অরুচি
5. বমি বমি ভাব থাকা বমি হওয়া
6. মাংসপেশী বা জয়েন্ট এ ব্যথা
7. কালচে মুত্র
8. কাদার মত মল
>Chronic Hepatitis এর রোগীদের বেশিরভাগেরই কোন লক্ষন ই থাকেনা। কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের লিভার ড্যামেজ হতে থাকে। বাকীদের লক্ষন উপরের মতই।

টেস্টঃ
ELISA, Liver Function Test, Albumin Test, Prothrombin time ইত্যাদির মাধ্যমে সহজেই শরীরে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দ্বারা সংক্রমনের প্রমাণ পাওয়া যায়। যারা chronic hepatitis এ ভুগছেন, লিভার বায়োপসির মাধ্যমে জানা যায় যে, তাদের লিভার ভাইরাস দ্বারা কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চিকিৎসাঃ
> Acute hepatitis B: এই ক্ষেত্রে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করতে থাকে। আপনার আলাদা কোন ওষুধের প্রয়োজন নেই।আপনাকে শুধু বিশ্রাম নিতে হবে, পর্যাপ্ত পানীয় এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
>Chronic hepatitis B: এই ক্ষেত্রে ডাক্তার এন্টি-ভাইরাল ওষুধ (peginterferon) দিবেন যা আপনার দীর্ঘদিন খেতে হবে। এই ওষুধ ধীরে ধীরে আপনার শরীরে ভাইরাসের মাত্রা কমিয়ে আনবে। নিয়মিত ডাক্তারের তত্ত্ববধানে থাকতে হবে যাতে জানতে পারেন যে আপনার শরীরে ভাইরাস এখন কি অবস্থায় আছে। মনে রাখবেন, আপনার শরীরে কোন অসুস্থতার লক্ষন না থাকলেও আপনার লিভারকে বাচানোর জন্য এবং অন্যকে সংক্রমনের মাত্রা কমানোর জন্য আপনাকে ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে। যে কোন ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে, এমন কি সাধারণ প্যারাসিটামল বা কোন হার্বাল ওষুধ হলেও। এই অবস্থার কোন স্পেশাল ডায়েট নেই।
>Acute বা Chronic hepatitis B এ আক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর ভ্যাকসিন দিলে আপনি সুস্থ্য হবেন না বা আপনার লিভার ভাইরাসের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে বাচবে না। যতদিন শরীরে ভাইরাস থাকবে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে এবং যদি লিভার অকার্যকর হয়ে পড়ে তাহলে একমাত্র চিকিতসা হলো, লিভার প্রতিস্থাপন। সুতরাং-1.রোগ হওয়ার আগেই ভ্যাকসিন নিন 2. Acute hepatitis হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং 3. Chronic hepatitis হলে অবশ্যই ডাক্তারের তত্তাবধানে থাকুন।

প্রতিরোধঃ
>বাচ্চারা জন্মের সাথে সাথেই হেপাটাইটিস বি টীকার প্রথম ডোজ ও ৬-১৮ মাসের মধ্যে দ্বীতিয় ও তৃতীয় ডোজ নিতে পারে।
>যেসব বাচ্চার মায়ের acute বা chronic hepatitis B আছে, তাদের জন্মের ১২ ঘন্টার মধ্যে একটি স্পেশাল ভ্যাকসিন (hepatitis B immune globulin বা HBIG) নিতে হবে।
>কেউ জন্মের পর ভ্যাকসিন না নিলে ১৮ বছর বয়সের আগে catch-up ভাকসিন বা এই বয়স পার হয়ে গেলে adult vaccine নিতে পারেন। ৩ ডোজের এই ভ্যাকসিন শতভাগ কার্যকরী এবং ১৯৮২ সালে আবিষ্কারের পর থেকে ১০০ মিলিয়ন মানুষের উপর প্রয়োগ করে কোন প্বার্শ-প্রতিক্রিয়ার কথা জানা যায়নি। তবে যাদের ইস্টে এলার্জি আছে তারা এটি নিতে পারবেন না। হেপাটাইটিস বি ভাকসিন এখন দেশের অনেক জায়গাতেই দেওয়া হয়। তিন ডোজ মিলিয়ে আনুমানিক খরচ ২৫০০ টাকা (লিভার ফাউন্ডেশন এর তথ্য মতে)
>যারা সংক্রমিত হওয়ার সাথে সাথে টের পেয়েছেন, তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে হেপাটাইটিস ভ্যাকসিন অথবা স্পেশাল ভ্যাকসিন (HBIG) নিতে পারেন।
>যাদের স্বামী বা স্ত্রীর chronic hepatitis B আছে বা ডাক্তার-নার্স, যারা নিয়মিত হেপাটাইটিস রোগীর সংস্পর্শে আসেন, তারা হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন নিয়ে রাখুন।
>যে কোন রক্ত নেয়ার আগে পরীক্ষা করে নিন।
>সিরিঞ্জ ব্যবহারে সবসময় নতুন সুই ব্যবহার করুন।
>ট্যাটু করার আগে নতুন সুই ব্যবহার করুন।
>আপনার স্বামী বা স্ত্রীর acute বা chronic hepatitis Bথাকলে নিরাপদ মিলনে (কন্ডোম ব্যবহার করে) অভ্যস্ত হোন.
>সংক্রমিত ব্যক্তির কোথাও কেটে গেলে, এক ভাগ ব্লিচ এর সঙ্গে ৯ ভাগ পানি মিশিয়ে তা দিয়ে পরিষ্কার করুন। পরিষ্কার না করলে এমনি আধা শুকনো কাটা থেকেও অন্যেরা সংক্রমিত হতে পারে।
>সংক্রমিত ব্যাক্তির সাথে একই টুথব্রাশ-রেজার ব্যবহার করবেন না।
>সংক্রমিত ব্যক্তি কখনোই রক্তদান করবেন না।

জন্ডিস

>জন্ডিস কি?
-জন্ডিস বলতে বুঝায় ত্বক-চোখ-মিউকাস মেমব্রেনে হলুদাভ রঙ দেখা যাওয়াকে।

>জন্ডিস কি কোন রোগ?
-মনে রাখবেন, জন্ডিস কোন রোগ নয়, বরং এটি হলো রোগের লক্ষন।

>এটি কোন কোন রোগের লক্ষন?
-যেসব রোগে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেসব রোগে জন্ডিস দেখা দেয়। যেমন লিভারে হেপাটাইটিস ভাইরাসের আক্রমন; মদ, অতিরিক্ত প্যারাসিটামল বা বিষাক্ত মাশরুম সেবনে লিভার ড্যামেজ, কিছু রোগে লিভারে অতিরিক্ত আয়ন জমে লিভার ড্যামেজ, শরীরের রোগ প্রতিরোধের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কোষগুলোর অতি সক্রিয় হয়ে গিয়ে লিভার কে আক্রমন অথবা জন্মগত ত্রুটির কারণে লিভারের সঙ্গে অন্ত্রের সংযোগ স্থলে কোনপ্রকার বাধা। এছাড়াও যদি কোন কারণে শরীরের লোহিত রক্তকনিকা অতিরিক্ত ভাংগতে থাকে তাহলেও জন্ডিস দেখা দেয়। এগুলো ছাড়াও ক্যান্সার, গলব্লাডারে সমস্যা ইত্যাদিতেও জন্ডিস দেখা যায়।

>বিলুরুবিন কি?
-আমাদের শরীরের লোহিত রক্ত কনিকা (Red Blood Cell) প্রতি তিন মাস পরপর ভেঙ্গে যায় এবং নতুন রক্তকনিকা তৈরী হয়। লোহিত রক্ত কনিকার ভিতর থাকে হিমোগ্লোবিন। হিমোগ্লোবিন ভেঙ্গেই বিলুরুবিন তৈরী হয় এবং লিভারের মাধ্যমে প্রকৃয়াজাত হয়ে অন্ত্রে পৌছায়। অন্ত্র থেকে এটি মলের সাহায্যে শরীরের বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়। কিছুটা আবার অন্ত্র থেকে রক্তে যায় এবং কিডনীর সাহায্যে মূত্রের মাধ্যমে শরীরের বাইরে বের হয়ে যায়।

>জন্ডিসের লক্ষন কি কি?
1. হালকা জ্বর
2. দুর্বলতা
3. হলুদাভ ত্বক ও চোখ
4. অরুচি
5. বমি বমি ভাব থাকা বমি হওয়া
6. মাংসপেশী বা জয়েন্ট এ ব্যথা
7. কালচে মুত্র
8. কাদার মত মল
9. চুলকানি


>জন্ডিসে কেন ত্বক-চোখ হলুদ হয়ে যায়?
-জন্ডিস মূলত হয় লিভারে সমস্যা হলে। লিভারে সমস্যা হলে তা রক্তের লোহিত রক্ত কনিকার হিমোগ্লোবিন ভেঙ্গে তৈরী বিলুরুবিন কে মলের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দিতে পারেনা। রক্তে তাই অনেক বিলুরুবিন জমে যায়। বিলুরুবিন এর রঙ হলো হলুদ। এই বিলুরুবিন ত্বকে-চোখে জমে তা হলুদ করে ফেলে।

>জন্ডিসে কেন কালচে মূত্র দেখা যায়?
-জন্ডিসে, বিলিরুবিন লিভারে প্রকৃয়াজাত হয়ে তা মূত্রের মাধ্যমে বের হয়ে যায় না। লিভার এ সময় নাজুক অবস্থাতে থাকাতে রক্তে অপ্রকৃয়াজাত বিলিরুবিন ই বেশী থাকে এবং মূত্রের সাহায্যে বের হয়। এই অস্বাভাবিক ধরণের বিলিরুবিন এর উপস্থিতিতে মূত্রের রঙ ভিন্ন হয়।

>জন্ডিস হলে মলের রঙ কেন পরিবর্তিত হয়ে যায়?
-সাধারণভাবে শরীর থেকে বিলুরুবিন নির্গত হওয়ার পথ হলো মল। বিলুরুবিন এর হলুদ রঙের কারণেই মলের রঙ হলুদ। যেহেতু জন্ডিস হলে মলের মাধ্যমে কম বিলুরুবিন নির্গত হয়, তাই মলের রঙ বদলে যায়।

>সাধারণ অর্থে কোন রোগের লক্ষন কে জন্ডিস বলা হয়?
-যদিও বিভিন্ন রোগেই জন্ডিস দেখা দেয়, তবে সাধারণ অর্থে জন্ডিস বলতে বুঝায় লিভারে হেপাটাইটিস ভাইরাসের আক্রমনে শরীরে অতিরিক্ত বিলুরুবিন জমে চোখ-ত্বক-মিউকাস মেমব্রেনে হলুদাভ ভাব। (লেখাটির বাকী অংশ ভাইরাল হেপাটাইটিস এর আলোকেই লেখা)।

>ভাইরাল হেপাটাইটিস রোগটির পর্যায় কি কি?
-এটি দুই প্রকার-
1.Acute: এই ক্ষেত্রে জন্ডিসের লক্ষন গুলো দেখা যায়। তখন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিজে নিজেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরী করতে থাকে এবং এই এন্টিবডি ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকে। যতদিন যুদ্ধ চলবে আপনি অসুস্থ থাকবেন। যখন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জয়লাভ করবে, জন্ডিসের লক্ষন গুলো চলে যাবে বা রোগের নিরাময় ঘটবে। কিন্তু দেহে এন্টিবডি গুলো রয়ে যাবে, ফলে ভবিষ্যতে আর কখনো হেপাটাইটিস ভাইরাস আপনার শরীরে বাসা বাধবে না।
2.Chronic: শুধুমাত্র হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাসের প্রভাবে রোগটি এই পর্যায়ে যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে জন্ডিসের লক্ষন দেখা যায়না (বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই). বছরের পর বছর রোগীর শরীরে ভাইরাস থেকে যায় এবং নীরবে লিভারের ক্ষতি করে যায়।
-সুতরাং জন্ডিস বলতে সাধারণ অর্থে Acute Viral Hepatitis বুঝায়।

>জন্ডিসের চিকিতসা কি?
-জন্ডিস বলতে সাধারণ অর্থে Acute Viral Hepatitis বুঝায় যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিজ থেকেই প্রতিরোধ করবে। প্রতিরোধ করতে গিয়ে এন্টিবডি তৈরী করবে যা ভবিষ্যতেও আপনাকে এই রোগ থেকে সুরক্ষা দিবে। সুতরাং জন্ডিসের জন্য কোন ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই।

>Acute Viral Hepatitis এ কি তাহলে ডাক্তার দেখানোরই কোনো প্রয়োজন নেই?
-আপনি অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন। কারণ-
1. জন্ডিস নির্মূল (অর্থাত ভাইরাস নির্মূল) এর জন্য ওষুধের প্রয়োজন না থাকলেও ডাক্তার আপনাকে জন্ডিসের অন্যান্য উপসর্গ যেমন বমি ভাব, চুলকানি ইত্যাদি কমানোর ওষুধ দিয়ে আপনার আরাম নিশ্চিত করতে পারবে।
2.কারো কারো ক্ষেত্রে (বৃদ্ধ বা শিশু) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল থাকতে পারে, যা ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করার জন্য যথেষ্ট নয়। ডাক্তার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।
3. যদিও জন্ডিস বলতে সাধারণ অর্থে ভাইরাল হেপাটাইটিস বোঝানো হয় এবং এই লেখার মূল ফোকাস সেখানেই, কিন্তু প্রথমেই তো বলে নিয়েছি যে অন্যান্য অনেক কারণে জন্ডিস হতে পারে। সেইসব কারণের জন্য কিন্তু ওষুধ খেতে হবে যা একমাত্র ডাক্তারই পারে নিশ্চিত করতে।


>কেন জন্ডিসে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খেতে মানা করা হয়?
-অনেক ওষুধ ই আমাদের শরীরে প্রবেশ করার পর তার প্রকৃয়াজাতকরণের কাজটি করে লিভার। জন্ডিসে যেহেতু লিভার খুবই নাজুক অবস্থায় থাকে, এই সময় আবার কোনো ওষুধ প্রকৃয়াজাতকরণের কাজটা লিভারের উপর অতিরিক্ত চাপ ফেলে দেয়। তাই এ সময় যত কম ওষুধ খাওয়া যায়, ততই ভালো। এমনকি জন্মনিয়ন্ত্রন পিল বা হার্বাল ওষুধও বর্জন করুন।


>জন্ডিসে কেন পানীয় খেতে বলা হয়?
-যেহেতু জন্ডিসে বমি হয়, এর ফলে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়। ডিহাইড্রেশন বা পানিশুণ্যতা এড়ানোর জন্য পানীয় খেতে বলা হয়। তাছাড়া, পর্যাপ্ত পানি খেলে মুত্রের সাহায্যে রক্তের অতিরিক্ত বিলিরুবিন ও বেশী নিষ্কাশিত হয়ে যায়।

>অতিরিক্ত পানি খেয়ে ফেললে কি কোন সমস্যা আছে?
-জন্ডিস হলে অতিরিক্ত নয়, পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ করুন। দিনে তিন লিটার বা ১২ গ্লাস এর মত পানি খেতে চেষ্টা করুন।

>জন্ডিসে কি সলিড খাবার বাদ দিয়ে শুধু পানীয় এর উপর ই নির্ভর করা উচিত?
-অবশ্যই না। এসময় দুর্বলতা কাজ করে। তাছাড়া বমির ফলে অনেক খাবার ই পেট থেকে বের হয়ে যায়। ফলে আপনার এসময় আরো বেশী ক্যালরি গ্রহণ প্রয়োজন। সলিড খাবার না খেলে ক্যলরি কোথা থেকে আসবে?

>জন্ডিসে স্যালাইন দেয়ার প্রয়োজন আছে কি?
-যদি পর্যাপ্ত পানি খাওয়া হয়, তবে প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি না খেয়ে পানিশুণ্যতা বা ডিহাইড্রেশন দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে স্যালাইনের প্রয়োজন আছে।


>জন্ডিসে কেন মদ্যাপান করতে মানা করা হয়?
-মদ প্রকৃয়াজাত হয় লিভারে। জন্ডিসে যেহেতু লিভার খুবই নাজুক অবস্থায় থাকে তাই এ সময় মদ্যাপান করতে একেবারেই নিষেধ করা হয়।

>জন্ডিসে কেন কম তেল খেতে বলা হয়?
-তেল কম খেতে বলা হয়, কারণ তেল হজম করার জন্য বাইল নামক একটি পদার্থের প্রয়োজন হয় যা লিভার হতে তৈরী হয়। জন্ডিসে যেহেতু লিভার নাজুক অবস্থায় থাকে তাই একে অতিরিক্ত চাপ না দেওয়ার জন্য তেল এড়িয়ে চলতে বলা হয়।

>জন্ডিসে কেন কম মশলা খেতে বলা হয়?
-জন্ডিসে এমনিতেই বমি বমি ভাব বেশী হয়। এ সময় এই জন্য কম মশলা খেতে বলা হয় যাতে বমি বমি ভাব কম লাগে। কিন্তু সাধারণ একটা বিশ্বাস আছে যে হলুদ খেলে জন্ডিসের হলুদ ভাব আরো বাড়বে, এই বিশ্বাসের কোন ভিত্তি নেই।

>জন্ডিসে মাছ-মাংস খাওয়া যাবে কি?
-অনেকে এ সময় মাছ-মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকে যা একেবারেই অনুচিত। এতে শরীরে প্রোটিন এর অভাব ঘটে যা আরো নানা ধরণের জটিলতা বয়ে আনতে পারে।

>জন্ডিসে কোন ভিটামিন খাওয়ার প্রয়োজন আছে কি?
-গবেষনায় ভিটামিন সেবনে জন্ডিস দ্রুত আরোগ্যের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই ভিটামিন নেওয়াটাও অত্যাবশ্যক না।

>জন্ডিসে বিশ্রাম নেওয়া কেন জরুরী?
-সমস্ত শরীরের মেটাবলিসমের অনেকটাই নির্ভর করে লিভারের উপর। এসময় বিশ্রাম নিলে মেটাবলিসমের হার কম থাকে এবং লিভারের উপর চাপ কম পরে।

>বিশ্রাম নেওয়ার জন্য কি ঘুমের ওষুধ খাওয়া যেতে পারে?
-না। লিভারের নাজুক অবস্থায় এই জাতীয় ওষুধ ব্রেনের উপর কাজ করে অনেক সময় আপনাকে এমনকি কোমাতেও নিয়ে যেতে পারে।

>জন্ডিসে কারো অতিরিক্ত ঘুমানোই কি তাহলে ভালো লক্ষন?
-জন্ডিসে বিশ্রাম নিলে জলদি সেরে উঠবেন এটা সত্যি, তাই বলে কারো অতিরিক্ত ঘুমানোটা ভালো লক্ষন না। কারো ঘুমের রুটিনে অস্বাভাবিক পরিবর্তন মানে তার শরীর অনেক বেশী দুর্বল হয়ে পরেছে, তাকে দ্রুত ডাক্তার এর তত্ত্বাবধানে নিতে হবে।

>জন্ডিসে কখন হাসাপাতালে ভর্তি করতে ?
-নিম্নের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে-
1.যদি রোগীর আচার-আচরন, বুদ্ধিমত্তার পরিবর্তন হয় (অস্বাভাবিক আচরণ করে বা মাথা কাজ করেনা)
2. যদি রোগীর শরীরে কাপুনি থাকে।
3. যদি কারো জাগা ও ঘুমের রুটিনে পরিবর্তন দেখা দেয়।
4.জন্ডিসে নিয়মিত billirubin level ও prothombin time test করা হয়। যদি billirubin level ৩০mg/dL এর বেশী অথবা prothombin time তিন সেকেন্ডের বেশী আসে, তবে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
5.যদি কারো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগে থেকেই দূর্বল বলে জানেন অথবা রোগী যদি ৫০ বছরের বেশী বয়স্ক লোক বা শিশু (এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল) হয়, তবে হাসপাতালে ভর্তি করুন।


>জন্ডিসের চিকিতসা হিসেবে কিছু পেশাদার লোকের দ্বারা –
1. চুনের পানি দিয়ে হাত ধোয়ানো হয় যাতে হাত থেকে হলুদ পানি বের হয়।
2.নাভীমুলে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করানো হয় যার ফলে নাভী হতে হলুদ একধরণের পদার্থ বের হয়।
3.এমন ওষুধ খাওয়ানো হয় যা খেলে বমি হয় এবং বমির সাথে হলুদ পদার্থের একটি চাক বের হয়ে আসে।
এইসব চিকিতসার কি কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে?
-আমি আগেই বলেছি, জন্ডিস মানে হলো শরীরে অতিরিক্ত বিলিরুবিন জমা। শরীর থেকে বিলিরুবিন বের হওয়ার রাস্তা হলো মল। ত্বক, নাভীমূল দিয়ে কখনো বিলিরুবিন বের হওয়া সম্ভব না। বিলিরুবিন পাকস্থলিতে কোন কঠিন পদার্থ হিসেবে জমাট বেধেও থাকেনা যা চাক হিসেবে বের হয়ে আসবে। এ্গুলো শুধুমাত্র অপচিকিতসা ছাড়া কিছুই না।

>জন্ডিসের চিকিতসা হিসেবে কিছু পেশাদার লোকের কাছ হতে একধরণের মালা আনা হয় যা মাথায় পরানো হয় এবং মালাটি আস্তে আস্তে গলায় নেমে আসে অথবা একটি পাতা বালিশের নীচে রেখে দেয়া হয় এবং আস্তে আস্তে তা দুটি হয়ে যায়। এইসব চিকিতসার কি কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে?
-এগুলোও মানুষকে ধোকা দেওয়ার উপায় মাত্র। জন্ডিস এমন একটি অবস্থা যা সময়ক্ষেপনে শরীরের রোগ অপ্রতিরোধ ক্ষমতা দ্বারা আপনি থেকেই নির্মূল হয়। এই ধরণের পদ্ধতিতে আসলে এমন কোন জারি জুরি থাকে যা কালক্ষেপনে ভোজবাজি দেখায় (যেমন মাথার মালা গলায় নামা বা একটি পাতা দুটি হওয়া). মূলকথা হলো সময় পার। এই সময়ে জন্ডিস আপনা থেকেই সেরে যায়। ফলে ঝরে বক মরে আর ফকিরের কেরামতি বাড়ে।

>জন্ডিসে কোন ভেষজ ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন আছে কি?
-ভেষজ ওষুধে কি কি উপাদান আছে তা অনেক ক্ষেত্রেই পরীক্ষিত না। জন্ডিসে লিভার এতটাই নাজুক থাকে যে এতে থাকা কোন উপাদান লিভারের ক্ষতি করে ফেলতে পারে। তাছাড়া আপনি নিজ থেকে সেরে উঠলে ওষুধ কেন খাবেন? তাছাড়া আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিজ থেকেই জন্ডিস প্রতিরোধ করবে। প্রতিরোধ করতে গিয়ে এন্টিবডি তৈরী করবে যা ভবিষ্যতেও আপনাকে এই রোগ থেকে সুরক্ষা দিবে। সুতরাং শরীরকে তার কাজ করতে দিন।

>তাহলে জন্ডিস হলে কি করবেন?
-জন্ডিসের জন্য প্রয়োজন Supportive Treatment. পর্যাপ্ত বিশ্রাম, পানীয়, নিয়মিত টেস্ট করানো এবং মোস্ট ইম্পরট্যান্টলি কুসংস্কার থেকে মুক্ত থাকা, ব্যস।

হেপাটাইটিস সি

সংক্রমনঃ
বিশ্বে হেপাটাইটিস সি তে আক্রান্ত এর সংখ্যা এইডস এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার দ্বিগুন।এর সংক্রমন ঘটে আক্রান্ত ব্যক্তির লালা ও রক্তের মাধ্যমে। সুতরাং আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে একই টুথব্রাশ-রেজর ব্যবহার, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে রক্তগ্রহন অথবা তার ব্যবহৃত সিরিঞ্জ বা সুই ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আক্রান্ত হতে পারেন। সুতরাং, আপনার জানা মতে কারো হেপাটাইটিস সি আছে জানলে এসব ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। মনে রাখবেন হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত রোগীর সাথে যৌনমিলনের মাধ্যমে ভাইরাসের সংক্রমন হয়না। মাত্র ১০% ক্ষেত্রে মায়ের কাছ থেকে গর্ভের সন্তান আক্রান্ত হয়। তাছাড়া সাধারণ ছোয়া, সাধারণ চুম্বন, একই থালা-বাটি (ধোয়া) ব্যবহার, বুকের দুধ, সর্দি-কাশির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায় না।

ধরণ ও লক্ষনঃ
>হেপাটাইটিস সি দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার পর ১৫% ক্ষেত্রে রোগের লক্ষন দেখা যায়। লক্ষনের মধ্যে আছে-
1. দুর্বলতা
2. অরুচি
3. বমি বমি ভাব
4. জয়েন্টে ব্যাথা
5. ওজন হ্রাস
কিন্তু হলুদাভ ত্বক-চোখ-মূত্র অর্থাৎ জন্ডিসের বহিপ্রকাশ থাকেনা। আপনার শরীরের সাধারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এ সময় হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করে তা হটাতে চেষ্টা করবে। ১০-৫০% (এই ১৫% এর ১০-১৫%) ক্ষেত্রে সে সফল হয়ে যাবে এবং আপনি সুস্থ্য হয়ে যাবেন। এই ধরণের রোগকে বলা হয় acute hepatitis C।
>বাকী ক্ষেত্রে সে সফল হবেনা এবং এই ভাইরাস আপনার শরীরে পাকাপোক্ত হয়ে বসবে। একে বলা হয় chronic hepatitis C।আবার যে ১৫% এ রোগের লক্ষন প্রকাশ পেয়ে acute hepatitis C হয়েছে, তাদের বাদে বাকী ৭৫% এর সরাসরি chronic hepatitis C হয়। chronic hepatitis C এর রোগীদের ৯০% এরই বছরের পর বছর কোন লক্ষনই থাকেনা, তাই তারা জানেই না যে তারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত। অথচ নিজের অজান্তে সে অন্যদের মাঝে এই ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে থাকে। পাশাপাশি নিজের অজান্তেই তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে, কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে এবং লিভার সিরোসিস অথবা লিভার ক্যান্সারে (Hepatocellular Carcinoma) পরিণত হয়। chronic hepatitis এর রোগীদের মাত্র ১০% এর ক্ষেত্রে নীচের লক্ষনগুলো দেখা যেতে পারে-
1. জ্বর
2. দুর্বলতা
3. হলুদাভ ত্বক ও চোখ
4. অরুচি
5. বমি বমি ভাব থাকা বমি হওয়া
6. কালচে মুত্র
7. কাদার মত বা সাদাটে মল
8. পেটে ব্যথা (উপরের দিকে, ডানে)
9.পেট ফুলে যাওয়া
10. চুলকানি

টেস্টঃ
ELISA, Liver Function Test, Albumin Test, HCV RNA Test ইত্যাদির মাধ্যমে সহজেই শরীরে হেপাটাইটিস সি ভাইরাস দ্বারা সংক্রমনের প্রমাণ পাওয়া যায়। যারা chronic hepatitis C এ ভুগছেন, লিভার বায়োপসির মাধ্যমে জানা যায় যে, তাদের লিভার ভাইরাস দ্বারা কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চিকিৎসাঃ
>হেপাটাইটিস বি এর মতই, এন্টিভাইরাল ড্রাগ ( peginterferon, ribavirin) দিয়ে এই রোগের চিকিতসা করা হয়। এই ওষুধের কাজ হলো শরীরে ভাইরাসের মাত্রা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা। সম্পূর্ণ ভাইরাস থেকে মুক্ত হতে পারবে কিনা তা নির্ভর করবে রোগীর জীবন কাল এর উপর। এটি ধীরে ধীরে ভাইরাসের মাত্রা কমায়, কিন্তু একেবারে নির্মূল করার আগেই হয়তো রোগী মারা যায় যেহেতু এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকৃয়া। এই ওষুধ আবার সবার জন্য সমান কার্যকরীও না। হেপাটাইটিস সি ভাইরাস এর তিনটি রূপ আছে, জেনোটাইপ ১, ২ এবং ৩,এই ওষুধগুলো জেনোটাইপ ২ এবং ৩ এর জন্য বেশী কার্যকরী। তাছাড়াও এসব ওষুধের অনেক প্বার্শ পতিক্রিয়া আছে। যেমন গর্ভবতী অবস্থায় ribavirin খেলে বিকৃত শিশু জন্মের সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনাকে সবসময় ডাক্তার এর তত্ত্বাবধানে থেকে ওষুধ খেতে হবে এবং আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে লিভারের অবস্থা পর্যবেক্ষন করতে হবে। আপনাকে কে সবসময় যে কোন বিষাক্ত বস্তু বা মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে। যে কোন ওষুধ, এমনকি হার্বাল হলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
>চিকিতসার পাশাপাশি তাদেরকে হেপাটাইটিস এ এবং বি এর টীকা নিয়ে রাখতে হবে। কেননা তারা যদি পাশাপাশি এ বা বি তে আক্রান্ত হয়, তা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য তা মারাত্মক হুমকি স্বরুপ।
>যাদের ইতমধ্যে লিভার সিরোসিস বা ক্যান্সার হয়ে গিয়েছে, তাদের একমাত্র চিকিতসা হলো লিভার প্রতিস্থাপন। তবে অনেক ক্ষেত্রে লিভার প্রতিস্থাপনের পরেও আবার ভাইরাস দেখা দিতে পারে।
>মায়ের কাছ থেকে সন্তান আক্রান্ত হলে, এর জন্য কোন চিকিতসা নেই।

প্রতিরোধঃ
এই রোগের এখন পর্যন্ত কোন ভ্যাকসিন বা টীকা নেই, সুতরাং সচেতনতাই পারে আপনাকে বাচাতে। নিচের বিষয়গুলোতে সতর্কতা অবলম্বন করুন-
>যে কোন রক্ত নেয়ার আগে পরীক্ষা করে নিন।
>সিরিঞ্জ ব্যবহারে সবসময় নতুন সুই ব্যবহার করুন।
>ট্যাটু করার আগে নতুন সুই ব্যবহার করুন।
>সংক্রমিত ব্যাক্তির সাথে একই টুথব্রাশ-রেজার ব্যবহার করবেন না।
>সংক্রমিত ব্যক্তি কখনোই রক্তদান করবেন না।
>সংক্রমিত ব্যক্তির কোথাও কেটে গেলে, এক ভাগ ব্লিচ এর সঙ্গে ৯ ভাগ পানি মিশিয়ে তা দিয়ে পরিষ্কার করুন। পরিষ্কার না করলে এমনি আধা শুকনো কাটা থেকেও অন্যেরা সংক্রমিত হতে পারে।
>যেহেতু যৌনসঙ্গমের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায় না, তাই আক্রান্তের স্বামী বা স্ত্রীর কোন বিশেষ প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যারা পায়ুপথে মিলন, যার ফলে পায়ুপথে আঘাতের মাধ্যমে রক্তপাত হতে পারে, সেইক্ষেত্রে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে (রাফ সেক্সের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য), অথবা যাদের অন্য কোন যৌনরোগ আছে যার ফলে মিলনের সময় রক্তপাত হতে পারে, সেইক্ষেত্রে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সুতরাং স্বামী-স্ত্রী এই দুই ক্ষেত্রে কন্ডোম ব্যবহার করবেন। স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কারোও সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক করা থেকে বিরত থাকবেন।
>মায়ের বুকের দুধ থেকে এটি ছড়ায় না, কিন্তু যাদের স্তন ফেটে রক্ত বের হওয়ার সম্ভাবনা আছে বা বাচ্চার অভ্যাস আছে স্তন কামড়িয়ে রক্ত বের করার, তারা স্তন্যপান করানো হতে বিরত থাকুন।

স্তন্যদানের উপকারীতা"



>শিশুর জন্য উপকারঃ
National Institute of Environmental Health Sciences এর গবেষনা অনুযায়ী, মাতৃদুগ্ধ পান শিশু মৃত্যুর হার ২০% কমায়। মূলত শিশুদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল থাকে এবং বিভিন্ন জীবানুর আক্রমনে এই দূর্বল রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে লড়াই করতে না পেরে শিশুরা মারা যায়। শিশুর শরীরে সংস্পর্ষে যেসব রোগ-জীবানু আসে, শিশুকে চুমু খাওয়া বা আদর করার মাধ্যমে তা মায়ের শরীরেও প্রবেশ করে। মায়ের শরীরে তখন এই জীবানুর বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরী হয়। মাতৃদুগ্ধ পানের মাধ্যমে এই এন্টিবডি শিশুর শরীরে আসে এবং শিশু তা দিয়ে রোগ-জীবানুর মোকাবেলা করে। মনে রাখবেন যে প্রত্যেক শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান শুধুমাত্র তার মায়ের দুধেই থাকে। বিভিন্ন গবেষনার ফল অনুযায়ী দেখা গিয়েছে যে, মাতৃদুগ্ধ পান কারী শিশুর ডায়রিয়া,নিউমোনিয়া, কান ও বুকের ইনফেকশন, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, একজিমা, এলার্জি এবং পূর্নবয়স্ক অবস্থায় ওবেসিটি (অতিরিক্ত ওজন) ও টাইপ ২ ডায়বেটিস হওয়ার সম্ভাবনা মাতৃদুগ্ধ পান না কারী শিশুর তুলনায় অনেক কম। তাছাড়া মাতৃদুগ্ধ পানকারী শিশুর বুদ্ধির বিকাশও সঠিক হয়।

>মায়ের জন্য উপকারঃ
The National Institutes of Health, ৯০০০ টি গবেষনা পত্রের ফলাফল পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে পৌছেছেন যে স্তন্যদানকারী মা প্রসব পরবর্তী বিষন্নতায় কম ভোগেন। স্তন্য দান কালে অক্সিটোসিন নামক একটি হরমোনের মাত্রা শরীরে বেড়ে যায় যেটি মানসিক রিল্যাক্সেশন (প্রশান্তি) এর জন্য দায়ী। স্তন্যদানকারী মায়ের শরীরে এই হরমোনের মাত্রা ৫০% যেখানে অন্য মায়েদের মাঝে এর মাত্রা থাকে মাত্র ৮%, তাছাড়া বিভিন্ন গবেষনায় প্রমান হয়েছে যে স্তন্যদানকারী মায়ের স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও স্তন্য না দানকারী মায়েদের তুলনায় কম। সন্তান গ্রহণের ফলে শরীরে যে বাড়তি মেদ জমা হয়, স্তন্যদান করলে তা আবার কমে যায়। কেননা মাতৃদুগ্ধ উৎপাদনের কাঁচামাল এখান থেকেই আসে। সুতরাং স্তন্য দান করানোর মাধ্যমে গর্ভধারণের পরে আবার শরীরের স্বাভাবিক আকারে ফিরে আসা সহজ হয়।

> ফরমুলা ফিডিং :
বাজারে যে সব গুড়ো দুধ পাওয়া যায় তাতে শিশুকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দান কারী এন্টিবডি থাকেনা। গুড়ো দুধে প্রোটিন এর পরিমাণ মায়ের দুধের চেয়ে বেশী হলেও তা মায়ের দুধের প্রোটিনের মত সহজপাচ্য নয়। বুকের দুধ পান করা শিশু বারে বারে খেতে চায়, কারণ এতে থাকা প্রোটিন সহজে হজম হয়ে যায় ফলে শিশুর ক্ষিধে লাগে। বারে বারে খেয়ে হজম করে ফেলার ফলে শিশুর অপেক্ষাকৃত কম গ্যাস হয়। গুড়ো দুধে মিনারেল বেশী থাকলেও তা মায়ের দুধে থাকা মিনারেলের মত দ্রুত শরীরে শোষিত হয়না। শোষিত না হওয়া অতিরিক্ত মিনারেল অন্ত্রে জমে অন্ত্রে থাকা ব্যাকটেরিয়ার ব্যলেন্স নষ্ট করে দেয় (উপকারী ব্যাকটেরিয়া কমে যায় ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ে), তাই গুড়ো দুধ খাওয়া শিশুদের মল তুলনামূলক শক্ত ও দূর্গন্ধযুক্ত হয়। মায়ের দুধে আবার ল্যাকটোস এর পরিমাণও গুড়ো দুধের চাইতে বেশী। ল্যাকটোস শিশুর বুদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

>কখন স্তন্যদান করবেন নাঃ
মা যদি HIV বহনকারী হয়ে থাকেন তবে তা বুকের দুধের মাধ্যমে শিশুকেও সংক্রমিত করবে। তাই এই মাকে স্তন্যদান করাতে হলে অবশ্যই Antiretroviral (ARV) ওষুধ গ্রহণ করে তারপর করতে হবে।

>স্তন্যদানের নিয়মঃ
সব শিশুকে জন্মের প্রথম ঘণ্টা থেকে শুরু করে ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ এবং ৬ মাস বয়স থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি উপযুক্ত বাড়তি খাবার খাওয়াতে হবে। মায়ের দুধ খাওয়ানো দুই বছর পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে। এই সময়টাতে মাকেও পুষ্টিকর খাবার ও পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে।